উন্নয়নের ছোয়ায় পাল্টে গেছে বিলুপ্ত ছিটমহলগুলো

Homeসর্বশেষজাতীয়

উন্নয়নের ছোয়ায় পাল্টে গেছে বিলুপ্ত ছিটমহলগুলো

তৌহিদুল ইসলাম,লালমনিরহাট::

দীর্ঘ ৬৮ বছরের বন্দী দশা থেকে মুক্তি পাওয়া সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে সরকার ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। দেশের অন্যান্য স্থানের অধিবাসীদের ন্যায় সমান সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতের জন্য রাস্তা ঘাট নির্মাণ,স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত,শিক্ষা লাভের সুযোগ ,বিভিন্ন ধরণের উন্নয়ণমূলক কাজ করে সাবেক ছিটবাসীদের উন্নয়নে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
বিলুপ্ত বাংলাদেশের ১১১টি ছিটমহলের ৪১ হাজার নাগরিক দীর্ঘদিন থেকে মৌলিক অধিকার বঞ্চিত ছিল। ১৭ হাজার ১৫৮ একর আয়তনের এসব ছিটমহলের অধিবাসীদের জন্য ছিল না কোন নির্দিষ্ট দেশ ও পরিচয়।ফলে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছিল।রাষ্ট্রীয় কোন সুযোগ সুবিধা তো দুরের কথা নুন্যতম কোন পরিচয়েও চলতে পারেনি তারা।
বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের সরকারের যৌথ প্রচেষ্টায় অবশেষে তারা মুক্তির স্বাদ পায়। গত ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে মোমবাতি প্রজ্জলন এবং ১আগষ্ট সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে বিলুপ্ত হয় অভিশপ্ত সেই ছিটমহল নামটি।স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি পায় এসব মানুষ।
স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বিলুপ্ত এসব ছিটমহলের মানুষের উন্নয়নে সরকার ব্যাপক কাজ শুরু করেছে। দীর্ঘ সময় পিছিয়ে থাকা এসব মানুষের জীবন মান উন্নয়নে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা,কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন,আশ্রায়ণ প্রকল্প,মসজিদ,মন্দির,কমিউনিটি ক্লিনিক,রাস্তাঘাট নির্মান,বিদ্যুৎ সংযোগ,,কৃষি ঋণ প্রদান সহ বিভিন্ন উন্নয়ণ মূলক কাজ চলছে।
পাটগ্রাম উপজেলার বিলুপ্ত ছিটমহল মুজিব-ইন্দিরা নগরের নেতা কবি গোলাম মতিন রুমি বলেন,আমরা ছিটমহলের বাসিন্দা হওয়ায় দীর্ঘদিন সরকারের নানা রকম উন্নয়ণ সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলাম।ছিটমহল বিনিময় ও স্বাধীন দেশের নাগরিক হওয়ার জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করেছি।এর ফলে আমরা ভারত বাংলাদেশ উভয় দেশের ছিটমহলবাসী মুক্তির স্বাদ পেয়েছি।এখন বর্তমান সরকার পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য নানারকম উন্নয়ণ কর্মকান্ড করছে।এর সুফল মানুষজন পাচ্ছে।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার ভিতরকুঠি বিলুপ্ত ছিটমহলের বাসিন্দা ও ছিটমহল বিনিময় আন্দোলনের নেতা হারুন অর রশিদ বলেন,আমরা এখন আর পিছিয়ে নেই। সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোতে বিদ্যালয়,কমিউনিটি ক্লিনিক,বিদ্যুৎসংযোগ,ইন্টারনেট সেবা,বয়স্কভাতা,বিধবাভাতা ,রাস্তাঘাট পাকাকরণ সহ বিভিন্ন উন্নয়ণমূলক কাজ চলছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ বলেন,লালমনিরহাটে ৫৯টি বিলুপ্ত ছিটমহল রয়েছে।বর্তমান সরকার ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই রাত বারোটায় মোমবাতি প্রজ্জলন আর কেক কেটে ও ১ আগষ্ট সুর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে ছিটমহলবাসীদের স্বাধীন দেশের নাগরিকের মর্যাদা প্রদান করেন।তখন থেকেই সেখানকার নাগরিকদের জীবন মানোন্নয়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।